আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢِ
প্রথমে শুকরিয়া আদায় করে নিচ্ছি মহান আল্লাহর দরবারে,যিনি আমাকে এই ছাত্রাবাসে ১৯ বছর চাকুরী করার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং ২০ বছরে পদার্পণ করার তৌফিক দান করেছেন।আলহামদুলিল্লাহ।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি,সেই সময়ের হোস্টেল সুপার স্যার ও সকল ছাত্রদের।যারা আমাকে ছাত্রাবাসে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।হোস্টেল জীবন সত্যিই একটা অন্য রকম জীবন।প্রথম সিলেট আসি তখন ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে আসছিলাম।তখন সুনামগঞ্জ টু সিলেট বাস ভাড়া ছিল ৩৫ টাকা।মা-বাবা,ভাই-বোন,আত্মীয় -স্বজন ও আমার প্রিয়তমা আয়েশা আক্তার কে রেখে আসতে কতটা কষ্ট লেগেছিলো তা ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভাব না।Abdul Kuddus ভাইয়ের মাধ্যমে ছাত্রাবাসে আসি।
ছাত্রজীবন নিয়ে কিছু কথা--
ছাত্রজীবন তো অনেক অনেক মধুর।হ্যা,এই জীবনেই ধরা দেয় অনাত্মীয়,রক্তের সম্পর্কহীন কিছু মানুষ।যাদের সাথে রক্তের বাঁধন নয়,গড়ে উঠে আত্মার বন্ধন।আর এই নির্লোভ,নিঃস্বার্থ সম্পর্কে গড়ার উপযুক্ত সময় মনে হয় শৈশব,কৈশোর ও স্কুল জীবন।এরপর কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়,দিনে দিনে বন্ধুত্ব বড় হতে থাকে।এক পর্যায়ে অনেক বন্ধুর দেখা মিলে,আনন্দে উচ্ছ্বাসে ছাত্র-জীবন শেষ হয়ে যায়।
যারা ছাত্র জীবনে এম,সি,কলেজে পড়েছে,অথচ ছাত্রাবাসে থাকেনি,সে তার জীবনে কি মিস করে গেলো সে কখনো জানবে না।সে শুধু লেখা-পড়া করে গেছে,কিন্তু শিক্ষার পুরাপুরি স্বাদ গ্রহণ করে যাইনি।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে শিক্ষার গুরুত্বারোপ...
পবিত্র কোরআনে নাজিলকৃত প্রথম আয়াতে জ্ঞানার্জন ও শিক্ষাসংক্রান্ত কথা বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘পড়! তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একবিন্দু জমাট রক্ত থেকে। পড়! আর তোমার প্রতিপালক পরম সম্মানিত। যিনি কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা সে জানত না।’ (সুরা আলাক, আয়াত: ১-৫)
শিক্ষা ইসলামের প্রাথমিক মৌলিক বিষয়াবলির অন্তর্ভুক্ত। আদি শিক্ষক হলেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। তাই ফেরেশতারা বলেছিলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি পবিত্র! আপনি যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের আর কোনো জ্ঞান নেই; নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী ও কৌশলী।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ৩২)
কর্মে ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধন নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তথ্য প্রদান বা জ্ঞানদান করাকে শিক্ষাদান বা পাঠদান বলে।
বিদ্যা মানে জ্ঞান, শিক্ষা মানে আচরণে পরিবর্তন। সব শিক্ষাই বিদ্যা কিন্তু সব বিদ্যা শিক্ষা নয়; যদি তা কার্যকরী বা বাস্তবায়ন করা না হয়। জ্ঞান যেকোনো মাধ্যমেই অর্জন করা যায়, অধ্যয়ন জ্ঞানার্জনের একটি পন্থা মাত্র। অধ্যয়ন তথা জ্ঞানচর্চা বা বিদ্যার্জন সব সময় শিক্ষার সমার্থক নয়।
ইসলামে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো আদম সন্তানকে মানুষরূপে গড়ে তোলা। যে শিক্ষা আত্মপরিচয় দান করে, মানুষকে সৎ ও সুনাগরিক হিসেবে গঠন করে এবং পরোপকারী, কল্যাণকামী ও আল্লাহর প্রতি অনুরাগী হতে সাহায্য করে, সে শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা। শিক্ষা মানুষের অন্তরকে আলোকিত করে, অন্তর্দৃষ্টি উন্মোচিত করে, দূরদর্শিতা সৃষ্টি করে। তাই আল্লাহ তাআলা বাবা আদম (আ.) কে সৃষ্টি করে প্রথমে তাঁর শিক্ষাব্যবস্থা করলেন। কোরআনের বর্ণনায়, ‘আর আল্লাহ তাআলা আদমকে সকল বস্তুর পরিণতি শেখালেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ৩১)। যে জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের অন্তর হিংসা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা থেকে মুক্ত হয়ে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়, তা–ই ইসলামি শিক্ষা।
রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শিক্ষাদান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার রব আমাকে তালিম দিয়েছেন, তা কতই–না উত্তম শিক্ষা এবং আমার রব আমাকে তারবিয়াত করেছেন, তা কতই না শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণ।’ (মুসনাদে আহমাদ)। মূলত শিক্ষা হলো আত্মজ্ঞান বা আত্মোপলব্ধি। শিক্ষিত মানুষ বিনীত ও নিরহংকার হয়ে থাকেন। শুধু ভাষা জ্ঞান বর্ণ জ্ঞান বা বিষয় জ্ঞানের নাম শিক্ষা নয়। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর অক্ষরজ্ঞান ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও ওহীর শিক্ষায় আলোকিত হয়ে তিনি হয়েছেন বিশ্ব-শিক্ষক।
যে শিক্ষা মানুষের কল্যাণে উপকারে আসে না, তা শিক্ষা নয়। যে শিক্ষা দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির সহায়ক, তাই প্রকৃত শিক্ষা।
মহানবী (সঃ)বিদ্যার্জনের জন্যে গুরুত্বারোপ করেছেন।তিনি বলেছেন-
"প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্যে ইলম বা বিদ্যা অর্জন করা ফরজ।"
তিনি আরও বলেন-
"দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত তোমরা ইলম বা জ্ঞান অর্জন কর।"
হজরত লোকমান (আ.) তার সন্তানকে বলেন, ‘হে বৎস! তুমি এ জন্য জ্ঞানার্জন করো না যে তুমি জ্ঞানীদের সাথে অহংকার করবে কিংবা মূর্খদের ওপর নিজেকে জাহির করবে অথবা বিভিন্ন মজলিসে নিজেকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করবে।
তুমি জ্ঞানকে উদাসীনতায় পরিত্যাগ করো না বা মূর্খতার মাঝে নিক্ষেপ করো না। হে বৎস! তুমি আপন চোখ দিয়ে দ্বীনী মজলিস বাছাই করে নাও।
যখন কোনো দলকে আল্লাহর স্মরণ করতে দেখবে তখন তাদের সাথে যোগ দিবে। তুমি যদি আলোচ্য বিষয়ে জ্ঞান রাখ তাহলেও তা তোমার জ্ঞানবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
আর যদি তা তোমার অজানা থাকে তবে তোমার নতুন কিছু জানা হবে। হতে পারে আল্লাহ তাদের ওপর রহমত নাজিল করবেন যার একটি অংশ তুমিও প্রাপ্ত হবে। আর যে দল আল্লাহকে স্মরণ করে না তাদের সাথে বসবে না। কেননা যদি আলোচ্য বিষয়টি সম্পর্কে তোমার জ্ঞান থাকে তাহলে তা তোমাকে কোনো ফায়দা দেবে না। পক্ষান্তরে যদি তা তোমার অজানা থাকে তাহলে তারা তোমাকে পথভ্রষ্ট ও অক্ষম করে ফেলবে। হতে পারে আল্লাহ তাদের ওপর শাস্তি অবতীর্ণ করবেন যা তোমাকেও স্পর্শ করবে।
হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘জ্ঞান অর্থ-সম্পদের চেয়ে উত্তম। কেননা জ্ঞান তোমাকে পাহারা দেয়, কিন্তু অর্থকে উল্টো পাহারা দিতে হয়। জ্ঞান হলো শাসক, আর অর্থ হলো শাসিত। অর্থ ব্যয় করলে নিঃশেষ হয়ে যায় কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে আরো বৃদ্ধি পায়।
শিক্ষা নিয়ে,শিক্ষামূলক কিছু উক্তি...
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড।পৃথিবীর বুকে যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত সে জাতি ততো বেশি উন্নত।
মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন..রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হল শিক্ষা..শিক্ষার শেকড়ের স্বাদ তেঁতো হলেও এর ফল মিষ্টি..এরিস্টল।
ব্যক্তির দেহ,মন ও আত্মার সুষম বিকাশের প্রয়াস হলো শিক্ষা..মহাত্মা গান্ধী।
মানুষের অন্তর্নিহিত পরিপূর্ণ বিকাশেই হল শিক্ষা..স্বামী বিবেকানন্দ।
ছাত্র-রাজনীতি নিয়ে কিছু কথা--
একজন শিক্ষার্থী,সে যত বড় ক্ষমতাবানই হউক,তার মুখে অশ্লীল কথা মানায় না।এটা তার জন্যই অবমাননাকর।সেটা কোনভাবেই শোভনীয় নয়।ভাবি আমি বড় নেতা,করি বাড়াবাড়ি,দিবা শেষে বুঝি আমি আদাড়ের হাঁড়ি।অপ্রিয় সত্য নেতিবাচক নয়।মিথ্যাশ্রয়ী ও অহেতুক প্রশংসা ইতিবাচক নয়।এই দুইয়ের প্রভেদ না বুঝে যারা অন্যকে হেয় করে তারাও মানুষ নয়।অন্যায় ও অসত্যকে হাসি-মুখে মেনে নেওয়া বিনয় নয়।এটা দুঃশীলদের অভিনয়।তাদের এই অভিনেতাদের কারণে আজ সবই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত।আমার স্বচক্ষে দেখেছি,উপলব্ধি করেছি এবং পরে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছি-মানুষের দোয়া যেমন সুফল বয়ে আনে।তেমন অভিশাপ ধ্বংস ডেকে আনে।
ক্ষমতায় থাকাকালীন যার পিছু পিছু ঘুরে,জ্বি ভাই,জ্বি ভাই বলে ঝড় তুলেছে।আজ তারাই ক্ষমতাহীন সেই ব্যক্তির প্রতি থুতু ছিটাচ্ছে।
আমি CM7,আমি মানুষকে সম্মান করি।ক্ষমতাকে ভয় করি না।তাই আমার ছাত্রাবাসে সম্মানের তারতম্য হয়।আমি কোন কালে ক্ষমতাবান মানুষের প্রতি কথায় কথায়,জ্বি ভাই জ্বি ভাই বলি নি।বরং দেখা গেছে ক্ষমতাবানের সাথে আমার সমস্যা হয়েছে।
তুমি তখনি সবার কাছে ভালো থাকবে।
যখন সবার,সব কথায় শুধু জ্বি জ্বি করে যাবে।
আমার দেখা এম.সি.কলেজ ছাত্রাবাসের ছাত্র...
"যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়..."
কত ছাত্র বছর শেষে বের হয়ে গেছে।তারা আজ সারা বিশ্বে ও দেশের উচ্চ পর্যায়ে স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে আছে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার শায়েস্তাগঞ্জ , হবিগঞ্জ।( ২৮ তম বিসিএস)
Minhajul Islam Jayed স্যার,হবিগঞ্জ সদরের ওসি (তদন্ত)জিয়াউর রহমান স্যার,বি এম আবুল মিয়া স্যার,ম্যানেজার, রুপালী ব্যাংক লি, সুনামগঞ্জ কর্পোরেট শাখা।
সুনামগঞ্জ সরকারী জুবিলী স্কুলের শিক্ষক Al Emran ভাই,Azhar Alam ভাই,গাছতলা উচ্চ বিদ্যালয় সহ অনেক বরেন্য মানুষ।আমার ব্লকের সবাই আমাকে অনেক ভালবাসতো,ছাত্র শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক Md Azizur Rahman Khan ভাই,ছাত্র দলের Moin Uddin Moni ভাই,জিয়া ভাই,ফারুক ভাই,সুহেল ভাই,ইমন ভাই,গিয়াস ভাই,মোসাদ্দিক ভাই,আতিক ভাই,হারিস ভাই,আবুল ভাই,রিপন ভাই,আহমদ ভাই,লায়েক ভাই,ফরহাদ ভাই,গিয়াস ভাই,সহ সবাই।অন্য ব্লকের তারাও আমাকে অনেক ভালবাসতো,এম,সি,
কলেজ ছাত্রালীগের সাবেক সভাপতি Tazim Uddin ভাই।আমাদের ৩য় ছাত্রাবাসে থাকতো তাজিম উদ্দিন ভাই।কত দুষ্টুমি করেছি,কত পাকনা পাকনা কথা বলেছি।কোনদিনও আমাকে ধমক দেয়নি।কত ভালবাসতেন আমাকে তাজিম ভাই।এম.সি.কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি রাজু ভাই।ছাত্রদলের তারেক ভাই,সাইফুল ভাই,শিবিরের Yasin Khan ভাই,নাহির ভাই,মনোয়ার ভাই,কামাল ভাই,নাসির ভাই,ছাত্র মজলিশের সানাউল সহ আরো অনেকে।কদর ভাই,খোকন ভাই,পাপ্পু ভাই,তারেক ভাই,মিজান ভাই,সুহেল ভাই,তপন দা,ছোট ভাই তারাও আমাকে অনেক সম্মান করতো।রাফিউল করিম মাসুম,মেহেদি হাসান উজ্জল,সুমন,রমজান,রাসেল,আরো অনেকে।
সবার নাম লেখতে পারিনি ভাই,আমাকে ক্ষমা করিও,আমি সবার আর আমার ভালবাসা সবার জন্য।নাম দিলেই শুধু ভালবাসা না,আমি মন থেকে সবাইকে ভালবাসি।আমি কি করে আপনাদের ভালবাসা ভুলবো। আপনাদের কাছ থেকে যে আমি শিক্ষা গ্রহণ করেছি।
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।
সবার নাম লিখতে গেলে আমার সারাজীবন লেগে যাবে।তার কোনো শেষ নেই।আমি কৃতজ্ঞ সবার কাছেই।
বিশ্বাস করুন,
আমি কবি হতে আসিনি,,আমি নেতা হতে আসি নি,,আমি প্রেম দিতে এসেছিলাম,,প্রেম পেতে এসেছিলাম-সে প্রেম পেলামনা বলে আমি এই প্রেমহীন নীরস পৃথিবী থেকে নীরব
অভিমানে চির দিনের জন্য বিদায় নিলাম..
............কাজী নজরুল ইসলাম।
‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’
এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই
মানুষ নামের মানুষ আছে
দুনিয়া বোঝাই
এই মানুষের ভীড়ে আমার
সেই মানুষ নাই।
আমার ১ম পরিবার...
আমার মা-বাবা,ভাই-বোন এবং আত্মীয়স্বজনরা।
আমার ২য় পরিবার... এম.সি.কলেজ ছাত্রাবাস।
আমার ৩য় পরিবার... টিলাগড় কেন্দ্রীয় মসজিদ মেস।মেসের ছাত্ররা আমার দুঃখের দিনের সাথী।তারা আমার বিপদের বন্ধু।তাদের কাছ থেকে যে সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছি তা আমি কোনদিন ভুলতে পারবো না।সেই বিপদের সময় তারা আমার অনেক ভাবে সহায়তা করেছে।কাজে সাহায্য করেছে।টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করেছে। বুদ্ধি- পরামর্শ দিয়েছে।আমার এই ছাত্রাবাসের পর সব চেয়ে বেশি মিস করি মেসের ছাত্রদের।২০১২ সালে ছাত্রাবাস জ্বালানোর পর,অনেক কষ্টে দিনগুলো কাটছিলো।ঠিক মত খাওয়া-দাওয়া করতে পারতাম না।গ্যাস লাইনে গ্যাস ছিলো না।টাকা-কড়িরও নাই,বেতনও কম।এর মাঝে আছে সংসারের খরচ।২০১৪ সাল পর্যন্ত কষ্ট করার পর।আমার ব্লকের ছাত্র ছোট ভাই রাসেল।টিলাগড় তাদের মেসে আমাকে নেয়।সেখানে প্রায় আড়াই বছর ছিলাম তাদের মেসে।তারপর থেকে আর কোনদিন খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট ও টাকা পয়সারও কষ্ট করতে হয়নি।আমার উন্নয়নের সবচেয়ে বেশি অবদান সেই টিলাগড় মেস আর আমার প্রিয়তমা আয়েশা।সেই মেসে এম.সি.কলেজের ছাত্র বেশি ছিলো না।তারা অন্যান্য কলেজের ছিলো।তারা সবাই আমাকে অনেক শ্রদ্ধা-সম্মান করতো।রাসেল,কামাল,রহমত,আশরাফ,সাইফুল,আমিনুল,সোহাগ,সালমান,সোহাগ ২,কাশেম,আসাদ,(রুহুল কমল)সুলতান সহ সবাই।তারা সবাই খুব ভাল ছিলো।তোমাদের সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।
আগে ছাত্রাবাসে দল ছিল বেশি,নেতা ছিল কম।
আজ দল কম নেতা বেশি।
কর্ম জীবনে যোগদানের পর একটু একটু করে মানুষের সাথে পরিচয় হয়।কাজের সম্পর্ক তৈরি হয়।কখনো কখনো সেই সম্পর্ক আবেগের বার্তাবরণে অলৌকিক সৌন্দর্য পায়।মনে হয় এই তো আমার ঠাঁই।এখানেই আমার সবকিছু।এখানকার মানুষেরা আমার চির আপন।আত্মার-আত্মীয়।
আর কত বছর এক জায়গায়।
থাকতে থাকতে আর ভাল লাগেনা।
কিভাবে ভালো লাগবে,যাদেরকে খুব আপন ভাবি তারাই ভাবে পর।
যাদের আমি আমি বন্ধু মনে করি তারাই ভাবে শত্রু।তাই তো তারা আমাকে মারার জন্য পরিকল্পনা করে।আমাকে ছাত্রাবাস থেকে বাহির করার জন্য চেষ্টা করে।একটা কথা মনে রেখো,অন্যের যারা ক্ষতি করে,আল্লাহ তাদের ক্ষতি করেন।আল্লাহ যা করে ভালোই জন্য করে।আমাকে ছাত্রাবাসে ভালবাসে শুধু আমার সহকর্মী ও স্যার তারা।তারাই আমার বিপদের সময় পাশে থাকে।আর কাউকে পাওয়া যায় না।বিপদে পরে দেখেছি কে আপন কে পর।
স্যার তারাও আমাকে অনেক ভালবাসে,বিশেষ করে Mohammad Mohmmad Jamal Uddin স্যার।
আজকে আমার এই লেখা পড়ে,হয়তো অনেকে প্রবাসে থেকেও এই মুহূর্তে প্রবাসে নেই।ফিরে গেছে তাদের প্রাণ-প্রিয় ছাত্রাবাসে।এই সময়ে বর্তমান থেকেও আমি আর এই সময়ে নেই।ফিরে গেছি আমার সেই ছাত্রাবাসের ছেলেবেলায়।আমার হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলায়।স্মৃতির ক্যানভাসে অদৃশ্য ছায়াচিত্রে।স্মৃতির মধ্যেই আমাদের অস্তিত্বের ফেলে আসা সময়ের ছায়াচিত্র।আবার কি দেখা হবে?সেই সময়ের সেই প্রাণপ্রিয় বড় ভাইদের ও বন্ধু এবং ছোট ভাইদের।আমি খুব বেশি মিস করি।আমার ফেলে আসা সেই সোনালী দিনগুলো।কি ছিলাম আমি ছাত্রাবাসের,যাদের এত ভালবাসা পেয়েছি।আজ কেন এত কষ্ট লাগে,এই ছাত্রাবাসে থাকতে।আমি তো কাউকে শত্রু মনে করি না।আমি মনে করি সবাই আমার খুব আপন জন।
কাহারে করিছ ঘৃণা তুমি ভাই.
কাহারে মারিছ লাথি?
হয়ত উহারি বুকে ভগবান
জাগিছেন দিবা-রাতি..
গাহি সাম্যের গান-
যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে
সব বাধা-ব্যবধান..কাজী নজরুল ইসলাম।
কখনো তুমি যতোই
ভাল হও না কেন,
যতই অন্যের জন্য নিজেকে
বিলিয়ে দাও না কেন
যতই কষ্ট সহ্য করো না কেন
কিছু মানুষের কাছে তবুও তুমি
কখনই ভালো হতে পারবে না!!!
এখনো যে পরে আছি ছাত্রাবাসে,শুধু মাত্র এলাকার মানুষের ভালোবাসায়।
বিশেষ করে অত্র এলাকার বড় ভাই,বন্ধু-বান্ধব ও ছোট ভাইদের মায়ার বন্ধনে আছি।
আমাকে আমার সুনামগঞ্জের মানুষ এত চিনেনা।সিলেটের হাজার হাজার মানুষ চিনে।কারণ ছোট বেলা থেকেই এই সিলেটে আছি,এই ছাত্রাবাসে আছি।সিলেটের মানুষের কাছ থেকে যে আদর,মায়া,ভালবাসা পেয়েছি,তা কোনদিনও ভুলার নয়।সাইদুল ভাই,রিয়াজ ভাই,ফরিদ ভাই,হোসাইন ভাই,রুপা ভাই,কয়েজ ভাই,লাহিন ভাই,শাজাহান ভাই,দিলু ভাই,কামাল ভাই,সুলতান ভাই,আলীম ভাই তারা ছাড়াও আরো অনেকে।এরপর মুমিন,আলমগীর,আলামিন,রতন,আনোয়ার,সুহেল,দ্বীন ইসলাম,ফাহাদ,বিল্লাল,হযরত আলী
(♥শালা শাওন ও তার কইতামনিবে।কইয়া ফালাই,তোর বোনেরা♥)।
এবং আমার ছাত্রাবাস কোয়ার্টারের সকল চাচা,চাচী,বড় ভাই,ছোট ভাই,বন্ধু-বান্ধব,ছেলে-মেয়ে।এক কথায় সবাই।
তবে মতিনের মা এর কথা আলাদা ভাবে বলতে হয়।কারণ - সবচেয়ে বেশি আমার খোঁজ খবর মতিনের মা নেয়।ছাত্রাবাস বন্ধ হলে,আমার খাওয়া-দাওয়ার খররা-খবর নেয়।যদি তাদের ওই দিকে কিছুদিন না যায়,ছাত্রাবাসে এসে আমার খবর নেয়।
সকলের তরে সকলে আমরা,প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
সিলেটে পাঁচটি পরিবারকে,আমার নিজের পরিবার বলে মনে করি।১ শাওন,২ মতিন,৩ লায়েক,৪ আবুল দা এবং৫,আলমগীর।
"""চারদিকে সাঁঝের আঁধার,
দেখি আঁখি ঘুরিয়ে।
একলা বসে ভাবছি মনে,
দিন কী এলো ফুরিয়ে""।
"""অত্যাচারিত হইয়া যেখানে
বলিতে পারি না অত্যাচার,
যথা বন্দিনী সীতা-সম বাণী
সহিছে বিচার-চেড়ীর মার""।
কাজী নজরুল ইসলাম
পরানের ছাত্রাবাসরে বুড়া হইলাম তোর কারণে।
তবো তোর মন পাইলাম না।
যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে,
চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,
মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনা দেনা,
বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে--
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে।
যখন জমবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়,
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়,আহা,
ফুলের বাগান ঘন ঘাসের পরবে সজ্জা বনবাসের,
শ্যাওলা এসে ঘিরবে দিঘির ধারগুলায়--
তখন এমনি করেই বাজবে বাঁশি এই নাটে,
কাটবে দিন কাটবে,
কাটবে গো দিন আজও যেমন দিন কাটে,আহা,
ঘাটে ঘাটে খেয়ার তরী এমনি সে দিন উঠবে ভরি--
চরবে গোরু খেলবে রাখাল ওই মাঠে।
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে।
তখন কে বলে গো সেই প্রভাতে নেই আমি।
সকল খেলায় করবে খেলা এই আমি--আহা,
নতুন নামে ডাকবে মোরে, বাঁধবে নতুন বাহু-ডোরে,
আসব যাব চিরদিনের সেই আমি।
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে,
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে॥
..রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
অপরদিকে ক্ষণে ক্ষণে আমার বুক-চেড়া ও অশান্তির দীর্ঘশ্বাসে নিজেই চমকে চমকে উঠছি।বারবার মনে হচ্ছে আবার যদি ফিরে পেতাম (২০০২-২০১২)সাল।
যেদিন আমি হারিয়ে যাব,
বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর
পুছবে।বুঝবে সেদিন বুঝবে।
...কাজী নজরুল ইসলাম।
আমার ১৯ বছরের গল্প কাহিনী এই অল্প সময়ে লিখে শেষ করতে পারব না,তাই সকলের সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
হে আল্লাহ সকলের সুবিবেক জাগ্রত কর এবং সকলকে শান্তিময় জীবনকাল দান কর,আমিন।
আল্লাহ হাফেজ।
https://captainmannan.blogspot.com
youtube/Md Abdul Mannan Manna
https://www.facebook.com/MannanCM7/
https://twitter.com/MannanCM?s=07
Instagram/mannancm7
https://www.linkedin.com/in/md-abdul-mannan-85a4811b3
mannan.mch@gmail.com
Comments
Post a Comment